techowe.com https://www.techowe.com/2023/02/blog-post_16.html

ব্লগার থেকে আয় করার ৭ টি উপায়

ব্লগার

ফ্রিতে ওয়েবসাইট তৈরী করার জন্য ব্লগার একটি সেরা মাধ্যম। বর্তমানে ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন ভাবে আয় করা যায়। ব্লগার দিয়ে যেহেতু ওয়েবসাইট তৈরী করা যায় তাই আপনি ব্লগার থেকে আয় করতে পারবেন। আজকের পোস্টে আমি আলোচনা করব কিভাবে ব্লগার থেকে আয় করা যায়। তো দেরী না করে চলুন আমাদের আজকের আলোচনা শুরু করি।

কিভাবে ব্লগার থেকে আয় করবেন?

ব্লগার থেকে বিভিন্ন ভাবে আয় করা যায়। তবে কিছু জনপ্রিয় মাধ্যম আছে যার মাধ্যমে আপনি ব্লগার থেকে আয় করতে পারবেন। নিম্নে ব্লগার থেকে আয় করার কিছু জনপ্রিয় মাধ্যম নিয়ে আলোচনা করা হলো।

১. গুগল এডসেন্স থেকে আয়

বর্তমানে গুগল এডসেন্স সবথেকে বড় বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক। বিভিন্ন ধরনের ছোট বড় কোম্পানির গুগল এডসেন্স বিজ্ঞাপন দেখায়। আপনি আপনার ব্লগার ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্সের বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করতে পারবেন। তবে গুগল এডসেন্স থেকে আয় করতে হলে আগে এডসেন্স এপ্রুভ পেতে হয়। এডসেন্স এপ্রুভ পেতে হলে ওয়েবসাইটে ভালো কোয়ালিটির কন্টেন্ট থাকতে হবে। এছাড়া ওয়েবসাইটে এমন কোন কিছু থাকা যাবে না যা এডসেন্স নিয়ম ভঙ্গ করে। তাহলেই আপনি এডসেন্স এপ্রুভ পাবেন। ব্লগারে আগে থেকেই এডসেন্স প্লাগইন যোগ করা আছে। তাই খুব সহজেই ব্লগার থেকে এডসেন্স এপ্রুভ পাবেন। এডসেন্স এপ্রুভ পাওয়ার পর আপনি ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করতে পারবেন। আয় এডসেন্সের সিপিসি এর উপর নির্ভর করবে। আপনি যখন ১০ ডলার আয় করবেন তখন আপনার ঠিকানাই একটি পিন যাবে। এই পিন দিয়ে আপনি এডসেন্স ভেরিফাই করতে পারবেন। এরপর ১০০ ডলার হলে আপনি ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে টাকা উত্তলোন করতে পারবেন।

২. বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয়

এডসেন্স সহ আরোও অনেক বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক আছে যেগুলো ব্যবহার করে আপনি আয় করতে পারবেন। সাধারণত সব বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কে ওয়েবসাইট এপ্রুভ করতে হয়। এরপর আপনি আয় করতে পারবেন। এর মধ্যে কিছু নেটওয়ার্ক যেখানে এপ্রুভ পাওয়া সহজ এবং কিছু নেটওয়ার্কে এপ্রুভ পাওয়া কঠিন। যেমন Media.net, Ezoic, Infolinks এসব বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কে এপ্রুভ পাওয়া কঠিন। আবার Adsterra, A-ads এসব বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কে সহজেই এপ্রুভ পাওয়া যায়। ব্লগার থেকে আয় করতে চাইলে এডসেন্সের পাশাপাশি কিছুটা এসব বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কের বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করতে পারবেন।

৩. এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়

ব্লগার থেকে আয় করার আরেকটি জনপ্রিয় উপায় হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং। বর্তমানে এফিলিয়েট মার্কেটিং করে প্রচুর টাকা আয় করা যায়। নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশনের বিনিময়ে একজন ব্লগার, ইউটিউবার বা ইনফ্লুয়েন্সারকে দিয়ে পন্য প্রচার করার প্রক্রিয়া এফিলিয়েট মার্কেটিং হিসেবে পরিচিত। ব্লগার এফিলিয়েট মার্কেটিং করার একটি সেরা উপায়। কারন ব্লগারে এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য লিংক, ইমেজ, ব্যানার, পপ আপ এডস ইত্যাদি বসানো যায়। সাধারণত সেল আসলেই আপনি কমিশন পাবেন। তবে খুব কম সংখ্যক কোম্পানি ক্লিক পরলে ইম্প্রেশনের উপর টাকা দেই। এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য Amazon, Daraz, Themeforest ইত্যাদি সাইটে সাইনআপ করতে পারেন। বাংলা আর্টিকেল হলে বিভিন্ন ধরনের বাংলা কোর্স সেল করার মাধ্যমে এফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়। টেন মিনিট স্কুল, বহুব্রীহি, ই-শিখন ইত্যাদি সাইট এর কোর্স সেল করতে পারেন। বিভিন্ন পন্য সেল করে এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চাইলে দারাজ, বিডিশপ এবং অন্যান্য ই-কমার্স সাইট থেকে এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন।

৪. পেইড আর্টিকেলের মাধ্যমে আয়

পেইড আর্টিকেল বা স্পন্সর নিয়েও আপনি ব্লগার থেকে আয় করতে পারবেন। এক্ষেত্রে যে স্পন্সর দেবে তার সাথে যোগাযোগ করে আপনি পেইড আর্টিকেলের মাধ্যমে আয় করতে পারেন। তবে ওয়েবসাইটে প্রচুর ভিজিটর থাকতে হবে এবং সেগুলো ইউনিক হতে হবে। অন্যথায় কেও সহজে স্পন্সর দেবে না। স্পন্সর পাওয়ার জন্য ওয়েবসাইটে আপনার সাথে ক্লায়েন্ট যেন যোগাযোগ করতে পারে এমন একটি মাধ্যম রাখতে পারেন। এছাড়া স্পন্সর অফার দিয়েও স্পন্সর পেতে পারেন। ওয়েবসাইটে বিভিন্ন স্থানে বিজ্ঞাপন বসানো যায়। এছাড়া টেক্সট, ইমেজ, ভিডিও ইত্যাদি ওয়েবসাইট ব্যবহার করা যায়। এ কারণে অনেকে ওয়েবসাইটে স্পন্সর দেই। আপনার ব্লগ পরিচিতি পেলে আপনিও স্পন্সর নিয়ে ব্লগার থেকে আয় করতে পারবেন।

৫. ইমেইলের মাধ্যমে আয়

ওয়েবসাইট নিউজলেটার ব্যবহার করে প্রচুর ইমেইল সংগ্রহ করা যায়। এসব ইমেইল বিভিন্ন কাজে প্রয়োজন হয়। যেমন ইমেইল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে প্রচুর এক্টিভ ইমেইল প্রয়োজন। আপনার ওয়েবসাইটে নিউজলেটার যোগ করতে পারেন। এর মাধ্যমে সবাই ইমেইল সাবস্ক্রাইব করে আপনার লেটেস্ট আর্টিকেলের নোটিফিকেশন পাবে। এছাড়া আপনি তাদের কাস্টম ইমেইল সেন্ট করতে পারবেন। এই ইমেইল ব্যবহার করে আপনি ইমেইল মার্কেটিং করতে পারবেন। এছাড়া অনেক কোম্পানি আছে যারা এরকম এক্টিভ ইমেইল ক্রয় করে মার্কেটিং করার জন্য। তাদের কাছে আপনি এই ইমেইল গুলো সেল করতে পারেন।

৬. সার্ভিস দিয়ে আয়

আপনি যদি কোন বিষয়ে পারদর্শী হন তাহলে ব্লগারের মাধ্যমে সার্ভিস দিয়ে আয় করতে পারেন। যেমন অনেকে ব্লগার ওয়েবসাইট ডিজাইন করে। আপনিও যদি পারেন তাহলে আপনার ব্লগের মাধ্যমে সার্ভিস সম্পর্কে ভিজিটরদের অবগত করতে পারেন। এর ফলে যাদের সার্ভিস দরকার তারা আপনার সাথে যোগাযোগ করে সার্ভিস নিতে পারবে। বিভিন্ন ধরনের ইমেজ, লিংক এবং পপ আপ ব্যবহার করে ভিজিটরদের সার্ভিস সম্পর্কে বলতে পারেন। এর ফলে আপনি বাড়তি কিছু টাকা আয় করতে পারবেন।

৭. ডিজিটাল মার্কেটিং করে আয়

ব্লগার থেকে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং করে অনেক সহজেই আয় করতে পারবেন। ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে পন্য বা সেবা প্রচার করার উপায় সমুহকে ডিজিটাল মার্কেটিং বলে। পন্য প্রচার করার ক্ষেত্রে ওয়েবসাইট সবথেকে সেরা মাধ্যম। আপনি যদি কোন ব্যবসা করেন বা কোন সার্ভিস দেন তাহলে আপনার ব্লগার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে  সেটি প্রচার করতে পারবেন। ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ভাবে ডিজিটাল মার্কেটিং করা যায়। যেমন এসইও করে আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং করতে পারবেন। এছাড়া আরোও অনেক উপায় আছে যার মাধ্যমে ওয়েবসাইটে ডিজিটাল মার্কেটিং করা যায়।

আমাদের শেষ কথা

ব্লগার দিন দিন জনপ্রিয়তা লাভ করছে। কারণ ব্লগার দিয়ে খুব কম সময়ে ফ্রিতে ওয়েবসাইট তৈরী করা যায়। আপনিও ব্লগারের মাধ্যমে ফ্রিতে ওয়েবসাইট তৈরী করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে খুব বেশি ওয়েব ডিজাইন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা লাগবে না। একটু পরিশ্রম করলে এবং সময় দিলে আপনিও ব্লগার থেকে আয় করতে পারবেন। ব্লগার সম্পর্কে আরোও পোস্ট আমরা ভবিষ্যতে করবো।

আমাদের আজকের আর্টিকেল এই পর্যন্তই। আজকে আমরা ব্লগার থেকে আয় নিয়ে অনেক কিছু আলোচনা করলাম। আশা করি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনার কাজে আসবে। প্রতিদিন এমন শিক্ষামুলক আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইট প্রতিনিয়ত ভিজিট করুন।


ধন্যবাদ সবাইকে।


অন্যদের সাথে শেয়ার করুন

0 Comments

দয়া করে নীতিমালা মেনে মন্তব্য করুন ??

নটিফিকেশন ও নোটিশ এরিয়া