আমরা অনেকেই ইউটিউব ভিডিও দেখে সময় পার করি। তবে আপনি কি জানেন? ইউটিউব থেকেও আয় করা যায়। আজকের পোস্টে আমি আলোচনা করবো ইউটিউব থেকে কিভাবে আয় করবেন। দেরি না করে চলুন শুরু করি।
কেন ইউটিউব থেকে আয় করবেন?
আপনার যদি কোনো বিশেষ বিষয়ের প্রতি জ্ঞান থাকে যা অন্য মানুষের উপকারে আসতে পারে তাহলে ইউটিউবের মাধ্যমে আপনি সেটি শেয়ার করতে পারবেন। যেমন ধরুন আপনি অংক ভালো পারেন। কিন্তু অনেকেই আছে যারা অংক ভালো পারে না। আপনি চাইলে ইউটিউবে অংক কষার ভিডিও আপলোড দিতে পারেন। যদি আপনার ভিডিও প্রচুর মানুষ দেখে তাহলে আপনি ভালো পরিমাণে টাকা আয় করতে পারবেন।
ইউটিউব থেকে আয় করার পদ্ধতি সমুহ
ইউটিউব থেকে বিভিন্ন ভাবে আয় করা যায়। নিচে এমন কয়েকটি পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হলো যেগুলোর মাধ্যমে আপনি আয় করতে পারবেন।
আরো পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম
১. গুগল এডসেন্স থেকে আয়
গুগল এডসেন্স হলো একটি বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্ক যেটি কোন কোম্পানির বিজ্ঞাপন তাদের মাধ্যম গুলোর সাহায্যে প্রচার করে। আপনি আশাকরি জানেন ইউটিউব গুগলের একটি সেবা। অতএব গুগল ইউটিউবেও তাদের বিজ্ঞাপন দেখায়। কিন্তু একজন কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ফ্রিতে ইউটিউবে কখনোই ভিডিও আপলোড করবে না। তাই ইউটিউব মনিটাইজেশন প্রাপ্ত কন্টেন্ট ক্রিয়েটরকে বিজ্ঞাপন থাকা আসা অর্থের বেশিরভাগ প্রদান করে। আপনিও মনিটাইজেশন নিয়ে ইউটিউব থেকে আয় করতে পারবেন। তবে এর জন্য আপনার ইউটিউব চ্যানেলে কমপক্ষে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং ৪০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম থাকা লাগবে। বেশিরভাগ ইউটিউবার ইউটিউব থেকে এডসেন্সের মাধ্যমেই বেশির টাকা আয় করে।
২. এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয়
গুগল এডসেন্সের পরে ইউটিউব থেকে আয় করার দ্বিতীয় জনপ্রিয় উপায় হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং। যদিও গুগল এডসেন্স থেকে আয় করার পদ্ধতি এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মধ্যে পড়ে। অন্যের পন্য কিছু কমিশনের বিনিময়ে প্রচার করে দেওয়া হলো এফিলিয়েট মার্কেটিং। বর্তমানে অনেক ইনফ্লুয়েন্সার এবং টেক ইউটিউবার এফিলিয়েট মার্কেটিং করে। বিশেষ করে টেক ইউটিউবার গণ এফিলিয়েট মার্কেটিং করে বেশি টাকা আয় করে। আপনি যদি ইউটিউবে জনপ্রিয় হতে পারেন তাহলে আপনিও এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় করতে পারবেন। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের এফিলিয়েট মার্কেটিং ই-কমার্স নেটওয়ার্ক আছে। এগুলোর মধ্যে এমাজন অনেক জনপ্রিয়। আপনি যদি কোনো এফিলিয়েট মার্কেটিং সাইটে রেজিস্ট্রেশন করেন তাহলে প্রতিটি প্রোডাক্টের উপর আপনাকে একটি এফিলিয়েট লিংক দেবে। সেই লিংক থেকে কেও কিনলে আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণ কমিশন পাবেন।
৩. পেইড প্রমোশন নিয়ে আয়
টাকার বিনিময়ে অন্যের পন্য প্রচার করাকে পেইড প্রমোশন বলে। বর্তমানে বেশিরভাগ কোম্পানি তাদের নতুন পন্য কোন ইউটিউবারের সাহায্য প্রচার করে। এক্ষেত্রে উক্ত কোম্পানি সেই ইউটিউবারকে কিছু টাকা দেয়। আবার অনেক কোম্পানি আছে যারা টাকার বদলে যে পন্যটি ইউটিউবার প্রচার করে দিচ্ছে সেই পন্যটি তাকে দিয়ে দেয়। একে ব্র্যান্ড কোলাবোরেশন বলে। পেইড প্রমোশন একটি কোম্পানি নিজে থেকে দেয় যার ফলে আপনি প্রথম প্রথম পেইড প্রমোশন করে আয় করতে পারবেন না। তবে একবার জনপ্রিয় হয়ে গেলে তখন কোন না কোন কোম্পানি নিজেই আপনাকে তাদের পন্য প্রচার করে দেওয়ার জন্য ইমেইল পাঠাবে।
৪. ইউটিউব মার্কেটিং
সহজ ভাষায় ইউটিউবের মাধ্যমে মার্কেটিং করার পদ্ধতিকে ইউটিউব মার্কেটিং বলে। বর্তমানে ইউটিউব একটি জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম অর্থাৎ ইউটিউবে প্রচুর ভিজিটর এবং কাস্টমার পাওয়া যায়। তাই ইউটিউব মার্কেটিং করার মাধ্যমে সহজেই পন্যের প্রচার এবং সেল পাওয়া যায়। আপনার যদি একটি ছোটখাটো ব্যবসা থাকে তাহলে ইউটিউবের মাধ্যমে সেটি প্রচার করতে পারেন। অনেক কোম্পানি তাদের ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে পন্য প্রচার করে।
৫. শর্টলিংক
বড় লিংক ছোট করার পদ্ধতিকে শর্টলিংক বলে। আমাদের অনেক ওয়েবসাইট, পেজ, গ্রুপ, প্রোফাইল ইত্যাদির লিংক কপি করে ব্যবহার করা লাগে। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই সেগুলো অনেক বড় হয় যা অসুন্দর দেখায়। তাই বর্তমানে অনেকে শর্টলিংক সার্ভিস ব্যবহার করে। এই শর্টলিংক টুল দিয়ে অনেক বড় বড় লিংক একদম ছোট করে ফেলা যায়। কিন্তু বর্তমানে এমন কিছু শর্টলিংক নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে যেখানে এই লিংক গুলো ব্যবহার করে অনলাইনে আয় করা যায়। আপনার ইউটিউব ভিডিওর ডিস্ক্রিপশনে এমন শর্টলিংক ব্যবহার করে অনলাইনে আয় করতে পারবেন। এক্ষেত্রে উক্ত লিংকে যতবার ক্লিক পড়বে আপনি তত পরিমাণ ইনকাম করতে পারবেন। তবে প্রথম দিকে শর্টলিংক ব্যবহার না করাই ভালো কারন যে শর্টলিংক সাইট পেমেন্ট দেই তাদের লিংকে প্রচুর বিজ্ঞাপন দেখাই তাই আপনার চ্যানেলে অর্গানিক ভিজিটর কমে যেতে পারে। তবে এডসেন্সের পরিবর্তে শর্টলিংক ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার না থাকলে শর্টলিংক থেকে ইনকাম করা খুব কঠিন।
৬. রেফার
রেফার কি আশাকরি সবাই জানেন। রেফার অনেকটা আফিলিয়েট মার্কেটিং এর মতো। প্রায় বেশিরভাগ সাইটে রেফার সিস্টেম থাকে। ধরুন আপনি একটি সাইটে রেজিস্ট্রেশন করলেন এখন সেই সাইটে যদি রেফার সিস্টেম থাকে তাহলে আপনাকে একটি রেফার লিংক দেবে। এখন আপনার ঐ রেফার লিংক থেকে কেও যদি সেই সাইটে রেজিস্ট্রেশন করে তাহলে আপনি কিছু কমিশন পাবেন। বর্তমানে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে এবং এপ্লিকেশনে রেফার সিস্টেম থাকে। এভাবে সেই সাইটে ইউজার সংখ্যা বাড়ে। আপনার যদি ইউটিউব চ্যানেল থাকে তাহলে রেফার করে সহজেই কিছু টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
আজ এ পর্যন্তই। আশাকরি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে।। এরকম আরোও আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট প্রতিনিয়ত ভিজিট করুন। ধন্যবাদ সবাইকে।
Comments
Post a Comment