Skip to main content

জেনে নিন লিপ ইয়ার বা অধিবর্ষ কি?


আপনি যদি লিপ ইয়ার কাকে বলে, লিপ ইয়ার কিভাবে বের করে,লিপ ইয়ার কেন হয়, লিপ ইয়ার নির্ণয় করার শর্ত, লিপ ইয়ারের দিন সংখ্যা কত সে সম্পর্কে কোনো কিছুই  না জানেন তবে আজ এই আর্টিকেল এই নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

সূচিপত্র:

1.  লিপ ইয়ার কাকে বলে

2.  লিপিয়ার প্রচলনের ইতিহাস (history behind leap-year )

3.  লিপ ইয়ার কেন হয়

4.  লিপ ইয়ার কিভাবে বের

5.  লিপ ইয়ার নির্ণয় করার শর্ত

6.  লিপ ইয়ারের দিন সংখ্যা কত

7.  পরবর্তী লিপ ইয়ার কবে কবে হবে

লিপ ইয়ার কাকে বলে? What is a leap year?

সাধারণত ইংরেজি বছর অনুযায়ী February মাসের দিনসংখ্যা হয় 28। কিন্তু প্রতি চার বছর অন্তর ফেব্রুয়ারি মাসে একটি অতিরিক্ত দিন যোগ করে সেটিকে 29 দিন করা হয় এবং সে বছরটি 365 দিন না হয়ে 366 দিন হয়ে থাকে। বছরটি যখন 366 দিন হয় তখন সেই বছরটিকে লিপইয়ার(leap year ) বা অধিবর্ষ বলা হয়

লিপিয়ার প্রচলনের ইতিহাস (history behind leap-year )

লিপ ইয়ারের ধারণাটি 4,000 বছর আগে প্রাচীন মিশরীয়রা প্রথম চালু করেছিল। তারা বুঝতে পৃথিবীর সূর্যের চারপাশে একবার প্রদক্ষিণ করতে সময় লাগে প্রায় 365.24 দিন ঠিক 365 দিন নয়।

তাদের ক্যালেন্ডারগুলিকে ঋতুর সাথে সামঞ্জস্য রাখতে মিশরীয়রা প্রতি চার বছরে তাদের ক্যালেন্ডারে একটি অতিরিক্ত দিন যুক্ত করেছিল। এই অভ্যাসটি পরবর্তীতে রোমানদের দ্বারা গৃহীত হয়েছিল, যারা অতিরিক্ত দিনটিকে "বিস সেক্সটাস" নামে অভিহিত করেছিল যার অর্থ "দ্বৈত ষষ্ঠ", যেহেতু এটি ফেব্রুয়ারির শেষের আগে ষষ্ঠ দিনের পরে যোগ করা হয়েছিল।

জুলিয়াস সিজার 45 খ্রিস্টপূর্বাব্দে একটি ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করেছিলেন যা জুলিয়াস ক্যালেন্ডার নামে পরিচিত ছিল। এই জুলিয়াস ক্যালেন্ডার অনুসারে অধিবর্ষ ছিল সামান্য দীর্ঘ , প্রতি চার বছরে ফেব্রুয়ারিতে একটি দিন যোগ করে। এটি পূর্ববর্তী পদ্ধতির চেয়ে কিছুটা  সঠিক থাকলেও সম্পূর্ণরূপে নির্ভুল ছিলোনা। ষোড়শ শতকে জুলিয়ান ক্যালেন্ডার ঋতু থেকে প্রায় 10 দিন বিচ্যুত হয়েছিল।

1582 সালে পোপ গ্রেগরি XIII একটি নতুন ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করেন, যা গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার নামে পরিচিত। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার লিপ ইয়ার পদ্ধতিকে আরও উন্নত করে। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে প্রতি চার বছরে একটি অধিবর্ষ ঘটে, যেগুলি 100 দ্বারা বিভাজ্য কিন্তু 400 নয়। এর মানে হল যে 1900 সালটি একটি অধিবর্ষ ছিল না, কিন্তু 2000 সাল ছিল।

গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার এখন বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহৃত ক্যালেন্ডার সিস্টেম এবং এটি আমাদের ক্যালেন্ডারগুলিকে ঋতুগুলির সাথে সুসংগত রাখতে সাহায্য করেছে৷

অধিবর্ষের গুরুত্ব

আমাদের ক্যালেন্ডারকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের বছরের সাথে সামঞ্জস্য রাখতে লিপ ইয়ারগুলি প্রয়োজন। পৃথিবী সূর্যের চারপাশে একটি প্রদক্ষিণ সম্পূর্ণ করতে প্রায় 365.24 দিন সময় নেয়, এই কারণে আমাদের একটি দিনের অতিরিক্ত ভগ্নাংশের জন্য প্রতি চার বছরে একটি অধিবর্ষ রয়েছে।

এই অতিরিক্ত সময়ের জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে, প্রতি চার বছরে আমাদের ক্যালেন্ডারে একটি লিপ ইয়ার যোগ করা হয়। একটি অধিবর্ষে একটি অতিরিক্ত দিন ফেব্রুয়ারী মাস ২৯ দিনে হয়। ফলে সেই বছরটি সাধারণ 365 এর পরিবর্তে 366 দিন হয়।

লিপ ইয়ার না থাকলে, আমাদের ক্যালেন্ডার ধীরে ধীরে জ্যোতির্বিদ্যার বছর থেকে দূরে সরে যাবে, এবং ঋতুগুলি শেষ পর্যন্ত ক্যালেন্ডারের সাথে সিঙ্কের বাইরে চলে যাবে। উদাহরণস্বরূপ, 100 বছর ধরে, ক্যালেন্ডার বছর এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানের বছরের মধ্যে পার্থক্য প্রায় 24 দিনের হবে, যা প্রায় এক মাস। এর অর্থ হ'ল ঋতুগুলি এখনকার তুলনায় বছরের বিভিন্ন সময়ে ঘটবে, যা বিভ্রান্তির সৃষ্টি করবে এবং কৃষি ও অন্যান্য ঋতুভিত্তিক কার্যক্রমের পরিকল্পনা করা কঠিন করে তুলবে।

লিপ ইয়ার আমাদের ক্যালেন্ডার বছরকে ঋতুর সাথে সিঙ্ক্রোনাইজ রাখতে সাহায্য করে এবং নিশ্চিত করে যে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, যেমন অয়নকাল এবং বিষুব, প্রতি বছর একই সময়ে ঘটে। এগুলি আধুনিক ক্যালেন্ডার সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং সময়ের ট্র্যাক রাখতে হাজার হাজার বছর ধরে ব্যবহার করা হয়েছে।

লিপ ইয়ার কেন হয়?Why are leap years?

 আমরা জানি পৃথিবী দু’রকম এর গতি রয়েছে-

  • আহ্নিক গতি  
  • বার্ষিক গতি

 এখন আমরা জানি আহ্নিক গতি অনুযায়ী দিনরাত্রি হয় কারণ এখানে, পৃথিবী নিজের চারিদিকে 24 ঘন্টায় এক পাক ঘুরে আসে

এখন বার্ষিক গতিতে কি হয়?

পৃথিবী তার কক্ষপথে সূর্যকে এক পাক ঘুরে আসলে সেই ঘূর্ণনকে বার্ষিক গতি বলা হয়।

বার্ষিক গতি সাধারণত আমরা 365 দিন ধরেই বা এক বছর ধরে নিই।

কিন্তু পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে একবার ঘুরতে সময় লাগে 365 দিন 5 ঘন্টা 48 মিনিট বা সহজে ধরলে 365 দিন 6 ঘন্টা

কিন্তু আমরা বছর ধরি 365 দিনে , 6 ঘন্টা পুরোপুরি বাদ দিয়ে দিই

এখন এই 6 ঘন্টা গুলো প্রতি চার বছর অন্তর জমা হতে হতে 24 ঘন্টা হয়ে দাঁড়ায় যা কিনা একদিনের সমান সুতরাং ফেব্রুয়ারি মাসে একদিন যোগ করা হয়।

লিপ ইয়ার কিভাবে বের করে?How to find a leap year?

আগে আমরা দেখলাম পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে এক পাক ঘুরে আসে 365 দিন 5 ঘন্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড। 

 কিন্তু আমরা নিজেদের জন্য 365 দিন 6 ঘন্টা ধরেনি কিন্তু এখানে আমরা প্রতি বছর 11 মিনিটের সমস্যা থেকে যায়।

এই সমস্যাটা দূর করার জন্য যে সমস্ত বছরগুলোকে 400 দিয়ে ভাগ করা যায় কেবলমাত্র সেগুলোকেই লিপ ইয়ার ধরা যুক্তিযুক্ত। 

 কিন্তু সেক্ষত্রে 6 ঘন্টার হিসেব মেলেনা তাই 4 দিয়ে ভাগ গেলেও সেটিকে লিপ ইয়ার ধরা হয়।

লিপ ইয়ার নির্ণয় করার শর্ত(Conditions for Diagnosing Leap Years)

একটি বছর একটি অধিবর্ষ কিনা তা নির্ধারণ করতে আপনি এই পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করতে পারেন:

  • বছরটি 4 দ্বারা বিভাজ্য কিনা তা পরীক্ষা করুন৷ যদি এটি না হয় তবে এটি একটি অধিবর্ষ নয়৷
  • বছরটি 100 দ্বারা বিভাজ্য কিনা তা পরীক্ষা করুন৷ যদি এটি না হয় তবে এটি একটি অধিবর্ষ৷
  • বছরটি 400 দ্বারা বিভাজ্য কিনা তা পরীক্ষা করুন৷ যদি এটি না হয় তবে এটি একটি অধিবর্ষ নয়।

সুতরাং, সংক্ষেপে বলা যায় যদি একটি বছর 4 দ্বারা বিভাজ্য হয় এবং 100 দ্বারা বিভাজ্য না হয়, অথবা যদি এটি 400 দ্বারা বিভাজ্য হয় তবে এটি একটি অধিবর্ষ।

 1984, 1988, 2000 প্রভৃতি সালগুলোকে leap year ধরা হবে কারণ সেগুলো 4 বা 400 দিয়ে ভাগ যায় কিন্তু 1900 leap-year নয় কারণ এটি 4 বা 400 দিয়ে ভাগ যায়না।

 লিপ ইয়ারের দিন সংখ্যা কত? What is the number of days in a leap year?

ফেব্রুয়ারি মাসে সাধারণত 28 দিন থাকলেও লিপ ইয়ারের বছরটিতে সেটি 29 দিন হয়ে যায়। এই অতিরিক্ত দিনটিকে leap day নামেও বলা হয় এবং বছরে 366 দিনের।

পরবর্তী লিপ ইয়ার কবে কবে হবে? (When will the next leap year be?)

2020 সালের পরবর্তীতে 2024,2028,2032,2036 সালগুলি লিপ ইয়ার হবে।  

 সবশেষে

আজকের আর্টিকেলে আমরা জানলাম, লিপ ইয়ার কাকে বলে, লিপ ইয়ার কিভাবে বের করে, লিপ ইয়ার কেন হয় , লিপ ইয়ার নির্ণয় করার শর্ত, লিপ ইয়ারের দিন সংখ্যা কত সে সম্পর্কে সব কিছু। 

Comments

Popular posts from this blog

সোশ্যাল মিডিয়ার সুবিধা এবং অসুবিধা/সোশ্যাল মিডিয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

সমসাময়িক জীবনে ব্যক্তিগত যোগাযোগের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ - একটি অনিবার্য উপাদান, বিশেষ করে যারা ব্যস্ত জীবন যাপন করেন এবং তথ্য আপডেটের জন্য এটির উপর নির্ভরশীল। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে লোকেরা বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে, পরিবারের সাথে কথা বলতে পারে এবং অসংখ্য প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী সমস্ত ঘটনা সম্পর্কে আপডেট থাকতে পারে। সবচেয়ে সাধারণ অনলাইন ক্রিয়াকলাপগুলির মধ্যে একটি হল সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করা। একটি সমীক্ষা অনুসারে ২০২১ সালে প্রায় ৮২% আমেরিকানদের এক বা একাধিক সামাজিক নেটওয়ার্কিং সাইটে একটি প্রোফাইল ছিল, যা আগের বছরের ব্যবহারের হার থেকে ২% বেশি। ২০২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২২৩ মিলিয়ন মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করত। সোশ্যাল মিডিয়ার সুবিধা/সোশ্যাল মিডিয়ার ভালো দিক কানেক্টিভিটি কানেক্টিভিটি সোশ্যাল মিডিয়ার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সুবিধাগুলির মধ্যে একটি। এটি যেকোনো সময়, সর্বত্র অগণিত ব্যবহারকারীকে লিঙ্ক করতে পারে। সোশ্যাল মিডিয়া এবং এর সংযোগের মাধ্যমে তথ্য বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে, যা মানুষের একে অপরের সাথে যোগাযোগ করা সহজ

কিওয়ার্ড কি, কত প্রকার, কিওয়ার্ড রিসার্চ কিভাবে করে ?

অনলাইন ক্ষেত্রে কিওয়ার্ড (keyword) বিশাল একটা জিনিস কারন একটা সামান্য keyword আপনার জীবন কল্পনাহীন পরিবর্তন করে দিতে পারে যদি আপনি ঠিকঠাক ভাবে খুঁজে পান। সুতরাং সবাই চায় সঠিক এবং ভালো কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করতে । আমাদের, keyword নিয়ে বিস্তারিত যেমন – কিওয়ার্ড কি, কিওয়ার্ড কত প্রকার, কিওয়ার্ড রিসার্চ কিভাবে করে, কিওয়ার্ড স্টাফিং কি জেনে নেওয়াটা অনেক বেশি জরুরি সাথে জেনে নেওয়া দরকার কিওয়ার্ড রিসার্চ কিভাবে করে, কিওয়ার্ড রিসার্চ কেন এত গুরুত্বপূর্ণ এবং ভালো বাংলা কিওয়ার্ড রিসার্চ টুল কোণগুলো। কিওয়ার্ড-keyword-কি-কত-প্রকার-কিওয়ার্ড-রিসার্চ-কিভাবে-করে সূচিপত্র 1 কিওয়ার্ড(keyword)কি 2 কিওয়ার্ড কত প্রকার(types of keywords) 2.1 ক. অভিপ্রায় ভিত্তিক প্রকার (Based On Keyword Intend ) – 2.1.1 ১. মার্কেটিং কিওয়ার্ড(marketing) 2.1.2 ২. ব্রান্ড বেসড কিওয়ার্ড (brand) 2.1.3 ৩. লোকেশন বেসড কিওয়ার্ড (geo-targeting) 2.1.4 ৫. কম্পিটিশন বেসড কিওয়ার্ড(competitor) 2.1.5 ৬. কাস্টমার বেসড কিওয়ার্ড (customer centric) 2.2 খ. কিওয়ার্ড দৈর্ঘ্য নির্ভর ভাগ (based on length) 2.2.1 ১. Short-tail keyword

প্রসেসর কি? প্রসেসর কিভাবে কাজ করে?

প্রসেসর কম্পিউটারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা এটাকে CPU বা সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট বলে জানি। কম্পিউটারের এই অংশটি মূলত আমাদের কমান্ড প্রসেস করে এবং আউটপুট দেয়। প্রসেসরকে বলা হয় কম্পিউটারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ প্রসেসিং ইউনিট ছাড়া আমরা কম্পিউটারের কোনো ধরনের কাজ করতে পারি না। আজ আমরা এই ব্লগ পোস্টে জানবো প্রসেসর কি, কিভাবে কাজ করে, এর গঠন কি এবং প্রসেসর কি কি। তো চলুন শুরু করা যাক আমাদের আজকের ব্লগ পোস্ট। আশা করি এই ব্লগ পোস্টটি পড়ার পর আপনি প্রসেসর সম্পর্কে আপনার সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন। প্রসেসর কি? প্রসেসর হল আমাদের ফোন বা ল্যাপটপে এক ধরনের বিশেষ হার্ডওয়্যার যা আমাদের নির্দেশ বা ইনপুট গ্রহণ করে এবং আমাদের ডিসপ্লের সামনে আউটপুট হিসেবে প্রদর্শন করে। সহজ ভাষায় যিনি প্রসেস করেন তিনি প্রসেসর। অর্থাৎ, আমাদের নির্দেশগুলি প্রসেস করে ভিজ্যুয়াল আকারে আমাদের কাছে আনা হয়। কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের মতো ইলেকট্রনিক ডিভাইসে প্রসেসর ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। প্রসেসর ছাড়া এই দুটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস একেবারেই অচল। প্রসেসর হল এক প্রকার গাণিতিক ইঞ্জিন। কারণ এটি একটি স্বয়ংসম্পূ