আজকে যুগান্তকারী এমন কিছু প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা করবো।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial intelligence)
ইন্টারনেট অফ থিংস (IOT-Internet of Things)
ব্লকচেইন (Blockchain)
3D প্রিন্টিং (3D Printing)
এজ কম্পিউটিং (Edge computing)
কোয়ান্টাম কম্পিউটিং (Quantum Computing)
5G প্রযুক্তি (5G)
সাইবার সিকিউরিটি(Cyber Security)
ডিজিটাল ট্রাস্ট(Digital Trust)
আরপিএ (RPA)
১. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial intelligence)
কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অন্যতম একটি শাখা হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমতা। এর জনক ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ও গণিতবিদ অ্যালান টুরিং (Alan Mathison Turing)।মানুষের চিন্তা-ভাবনা করা বা সিদ্ধান্ত নেওয়া যদি কৃত্রিম উপায়ে কোনো যন্ত্রের মাধ্যমে করানো যায় তাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমতা ইংরেজিতে Artificial intelligence বলে।বর্তমানে রোবটিক্স ও এক্সপার্টা সিস্টেমে এটি বহুল ব্যবহৃত। তবে এসব ক্ষেত্রে Artificial intelligence প্রয়োগ করার জন্য বেশ কিছু প্রোগ্রামিং ভাষা রয়েছে যেমন;C#, C/C++,Java,Python ইত্যাদি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একজন AI ইঞ্জিনিয়ারদের গড় বার্ষিক বেতন $110K এর বেশি। ভারতে, এন্ট্রি-লেভেলের বার্ষিক গড় এআই ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন প্রায় 8 লাখ।একজন অভিজ্ঞ এআই ইঞ্জিনিয়ার বার্ষিক 50 লক্ষ থেকে 1 কোটি টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারে।
২. ইন্টারনেট অফ থিংস (IOT-Internet of Things)
ইন্টারনেট থিংসের পরিবর্তে আইওটি শব্দটির ব্যবহার প্রথমে কেভিন অ্যাশটন ব্যবহার করেছিলেন।আইওটি
এর পূর্নরূপ ইন্টারনেট অফ থিংস।এর অর্থ বিভিন্ন জিনিসপত্রের সাথে ইন্টারনেটের সংযোগ করা।উদাহরন হিসেবে বলা যায় প্রতিটি ঘরের ফ্রিজ,লাইট,ওভেন, টিভি মানে ইলেকট্রনিক যন্ত্রাংশ গুলোকে ইন্টারনেটে সাথে সংযুক্ত করে বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করা যায় এই প্রযুক্তির সাহায্যে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত IOT Application গুলোর ব্যবহার বেড়েই চলেছে। নিচে আইওটির কয়েকটি ব্যবহার ক্ষেত্র উল্লেখ করা হলো।
ম্যানুফ্যাকচারিং
মেডিক্যাল
ট্রান্সপরটেশন
সিকিউরিটি
হেলথ ক্যায়ার
শিক্ষা ক্ষেত্রে ও ডিজিটাল শহর তৈরি করতে
৩. ব্লকচেইন (Blockchain)
এটি ডাটাবেস ব্লকে ডাটা সঞ্চয় করে এবং ক্রিপ্টোগ্রাফি দ্বারা একটি চেইনে একসাথে সংযুক্ত করে। এতে ডাটা বা তথ্যসমূহ সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় ,যে কেউ নেটওয়ার্ক থেকে সম্মতি ছাড়া চেইনটি মুছতে বা পরিবর্তন করতে পারবে না।বহুল নিরাপদ তথ্য সংরক্ষণ কেন্দ্র ব্লকচেইন। ব্লকচেইনের তথ্য হ্যাক করা অসাধ্যকর।
৪. 3D প্রিন্টিং
অপারেশন ম্যানেজার সহ বেশ কিছু চাকরির অপশন রয়েছে।বায়োমেডিকাল এবং শিল্প খাতে এর অনেক ব্যবহার হয়েছে।
৫. এজ কম্পিউটিং (Edge computing)
ডেটা আদান–প্রদানে ধীরগতি দূর করার জন্যই এজ (Edge) কম্পিউটিংয়ের সূচনা হয়। ইংরেজি edge শব্দের অর্থ কিনারা, প্রান্ত বা কোনো কিছুর ধার। যেখানে ক্লাউড কম্পিউটিংয়ে ডেটা সংরক্ষণ ও প্রসেসিং করা হতো দূরদেশের কোনো এক সার্ভারে, এজ কম্পিউটিংয়ে সেই প্রসেসিং হয় প্রাপক ও প্রেরক ডিভাইসের খুব কাছে।
৬. কোয়ান্টাম কম্পিউটিং (Quantum Computing)
কম্পিউটার দুনিয়ায় একবিংশ শতকের অসাধারন একটি সংযোজন কোয়ান্টাম কম্পিউটার ।দীর্যদিন থেকে বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত গবেষণায় অভূতপূর্ব সাফল্য এল কোয়ান্টাং কম্পিউটিং-এ ।কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের মাধ্যমে প্রসেসিং স্পিড অনেকটা বাড়িয়ে নেওয়া সম্ভব ।
যেসব গননা করেতে কয়েক বছর লেগে যাওয়ার কথা কোয়ান্টাম কম্পিউটারের মাধ্যমে সেসব দ্রুতই করা সম্ভব।শুধু সাধারন কম্পিউটারের বিটের জায়গায় কোয়ান্টাম কম্পিউটারে থাকবে কোয়ান্টাম বিট বা কিউবিট । যা আলাদা উপায়ে কাজ করবে ।
কিছুদিন পূর্বে গুগুল কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এর একটি পরীক্ষন করে এবং সাফল্য লাভ করে।
৭. 5G প্রযুক্তি (5G)
বর্তমান বিশ্ব ৫ জি এর আদলে বদলে যাবে।উন্নত প্রযুক্তির ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক ৫জি।২০১৭ সালের পর থেকে ২০১৮ এর পরবর্তী সময়ে উন্মুক্ত করা হয়েছে ৫ জি।২০১৭ সাল থেকে ৫জি এর বাস্তবায়ন কার্যক্রম পরিচালিত করছে বেশ কিছু নামিদামি প্রতিষ্ঠান।এরমধ্যে রয়েছে স্যামসাং, ইন্টেল, কোয়ালকম, নোকিয়া, হুয়াওয়ে, এরিকসনসহ আরো কিছু প্রতিষ্ঠান।দক্ষিণ কোরিয়া ২০১৮ শীতকালীন অলিম্পিকের দর্শকদের প্রথম ৫জি প্রনয়ন করিয়ে দেখিয়েছে।
লো-ব্যান্ড ৫জি” এবং “মিড-ব্যান্ড ৫জি”, ৬০০ মেগাহার্টজ থেকে 6 গিগাহার্জ, বিশেষ করে ৩.৫-৪.২ গিগাহার্জ তরঙ্গ ব্যবহার করে। ৫জি তে মিলিমিটার তরঙ্গ ব্যবস্থার প্রনয়ন করা হয়েছে ডাউনলোডের গতি সর্বোচ্চ ২০ গিগাবাইট/সেকেন্ড অর্জনের জন্য।সেকেন্ডের মধ্যে আপনার ফোনে একটি পূর্ণ-দৈর্ঘ্যের HD মুভি ডাউনলোড করতে সক্ষম হওয়ার বাইরেও (এমনকি একটি জনাকীর্ণ স্টেডিয়াম থেকেও), 5G আসলেই সব জায়গায় জিনিসগুলিকে সংযুক্ত করা – বিশ্বস্তভাবে, কোনো ব্যবধান ছাড়াই – যাতে লোকেরা রিয়েল টাইমে জিনিসগুলি পরিমাপ করতে, বুঝতে এবং পরিচালনা করতে পারে।
৮. সাইবার সিকিউরিটি(Cyber Security)
সাইবার সিকিউরিটি শব্দটির সাথে কমবেশি আমরা সবাই পরিচিত।তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর ডিভাইস সমূহের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থাকে সাইবার সিকিউরিটি বলে।
প্রযুক্তির উন্নতিতে সিকিউরিটির ব্যাপারটি আরো বেশি গুরুত্বপূর্ন হয়ে দাড়িয়েছে।কেননা ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার সহ আরো অনেক অসাধু হ্যাকার রয়েছে যারা ক্রমাগত বিভিন্ন ভাবে সিকিউরিটি সিস্টেম হ্যাক করতে চাইছে।অবৈধভাবে ডেটা অ্যাক্সেস পেতেই তারা এসকল কার্যক্রম চালাচ্ছে।বিশ্বব্যাপী সাইবার অপরাধ আরও বড় হারে বাড়ছে। ম্যাকাফির একটি নতুন প্রতিবেদন অনুমান করে যে বিশ্বব্যাপী সাইবার অপরাধের ক্ষতি এখন $1 ট্রিলিয়নেরও বেশি।
৯. ডিজিটাল ট্রাস্ট
ডিজিটাল ট্রাস্ট শুনেই মনে হতে পারে সত্যতা ডিজিটাল হয় কীভাবে?নানান ডিভাইস ও প্রযুক্তি সাধারন মানুষের মনে বিশ্বাস তৈরি করছে যা মানুষদের ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রতি বিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে।সাধারন মানুষ বিশ্বাস করে যে প্রযুক্তি একটি নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য ডিজিটাল বিশ্ব তৈরি করতে পারে এবং জনগণের আস্থা সুরক্ষিত করার বিষয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে কোম্পানিগুলিকে উদ্ভাবন এবং উদ্ভাবনে সহায়তা করতে পারে।
ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারকারীদের জন্য নিরাপত্তা তৈরি করতে নৈতিক হ্যাকিং ও সাইবার নিরাপত্তা সব সময় কাজ করে চলেছে।
১০.আরপিএ (RPA-Robotic Process Automation )
RPA ব্যবহার করা হয় ডাটা এন্ট্রি,ডাটা মিনিং ও মনিটরিং এর ক্ষেত্রে।প্রথাগত workfollow অটোমেশন টুলে, একজন সফ্টওয়্যার ডেভেলপার অভ্যন্তরীণ অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস (APIs) বা ডেডিকেটেড স্ক্রিপ্টিং ভাষা ব্যবহার করে ব্যাক এন্ড সিস্টেমে একটি টাস্ক এবং ইন্টারফেসকে স্বয়ংক্রিয় করতে কর্মের একটি তালিকা তৈরি করে। বিপরীতে, আরপিএ সিস্টেমগুলি অ্যাপ্লিকেশনের গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেসে ব্যবহারকারীকে সেই কাজটি সম্পাদন করে দেখে অ্যাকশন লিস্ট তৈরি করে এবং তারপর GUI-তে সরাসরি সেই কাজগুলি পুনরাবৃত্তি করে অটোমেশন সম্পাদন করে।
প্রযুক্তির সংক্রান্ত এসকল তথ্য আমাদের সাথেই থাকুন। প্রযুক্তির নতুন উদ্ভাবন গুলো আমাদের পৌছেঁ দিচ্ছে আধুনিক বিশ্বে।২০২৩ সালের প্রবনতা প্রযুক্তি গুলো কর্মস্থল সৃষ্টিতে বেশ সহায়ক।
Comments
Post a Comment